Our social:

Thursday, January 5, 2017

গোবিন্দ সিংহ

আজ শিখমতের সর্বশেষ মানুষী গুরু ; গোবিন্দ সিংহের ৩৫০ তম জন্মোৎসব। ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বরের আজকের তিথিতে তিনি বিহারের পাটনাতে জন্মগ্রহণ করেন।
হিন্দু ধর্ম থেকে আলাদা ধর্ম হয়ে যাওয়া তিনটি প্রধান ধর্মগুলোর মধ্যে শিখ অন্যতম। জয়দেব গোস্বামী, আচার্য রামানন্দ, সন্ত কবীর, সন্ত নামদেব, সন্ত রবিদাস, সন্ত সেনাজী, সন্ত পিপানন্দ সহ অনেক উত্তর ভারতের হিন্দু বৈষ্ণব সাধকদের রচনাবলীর উপরে শিখ মত প্রতিষ্ঠিত। সে হিসেবে শিখদের নিরাকার বৈষ্ণব সম্প্রদায় বললে খুব বেশী অত্যুক্তি হয় না।
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না শিখদের ধর্মগ্রন্থ গুরুগ্রন্থসাহেবে প্রায় তিন হাজারবারের উপরে রামনাম আছে ; প্রায় ষোল হাজারের কাছাকাছি কৃষ্ণ বা শ্রীহরির নাম আছে ; এ ছাড়া কেশব, গোবিন্দ, গোপাল, দামোদর, মাধব, মধুসূদন, মুরারী, মুকুন্দ, বাসুদেব, বিষ্ণু প্রভৃতি ভগবান শ্রীহরির নাম প্রায় দুই হাজার স্থানে আছে। এমন কি শিখগুরুদের এবং তাঁদের সন্তানদের নামের তালিকাতেও এই পবিত্র শব্দগুলো জাজ্বল্যমানভাবে আছে ।
গুরুগ্রন্থসাহেবের আদিতম মন্ত্রই হলো -

এক ওঙ্কার কর্তা পুরুখ নিরভউ নিরাবয়াব অকালমুরত অজুনী সয়ভঙ্গ গুরু প্রসাদ।
এক অদ্বিতীয় পরমেশ্বর ওঙ্কার পদবাচ্য। তিনিই একমাত্র
অস্তিত্বশীল এবং বিদ্বেষ রহিত। তাঁর মূর্তি বা স্বরূপ কালের দ্বারা বিচ্ছিন্ন নয়। তিনি অযোনি সম্ভব অর্থাৎ সয়ম্ভূ। তাকে একমাত্র গুরু কৃপায় জানা যায়।
এ মন্ত্রটিকে শিখ ধর্মের গায়ত্রী বলা হয়। শিখদের সকল উপাসনা এ মন্ত্রটি উচ্চারণ করেই হয়। আপনারা লক্ষ্য করেন এ মন্ত্রটিতে বেদের - 'একমেবাদ্বিতীয়ম ' সহ ব্রহ্মের সকল ধারণা পরিস্ফুটিত।
তুর্কি, মোগলদের নৃশংস অত্যাচারে নিষ্পেষিত হয়ে রাজনৈতিক কারণে ভক্তিবাদী কবীর পন্থ, রবিদাস পন্থের ন্যায় হয়েও নানক পন্থ হিন্দু সমাজ থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যেয়ে নানক পন্থ/ শিখ পন্থ শিখ ধর্মে রূপান্তরিত হয়ে যায়। গুরু গোবিন্দ সিংহের ধর্ম রক্ষার্থে 'খালসা বাহিনী' এবং পরবর্তীকালে মহারাজ রণজিৎ সিংহের রাষ্ট্রশক্তির সহায়তাই শিখজাতিকে একতাবদ্ধ করে তোলে।

 

0 comments:

Post a Comment